স্ট্যাগফ্লেশন (নিশ্চলতা-স্ফীতি) কী সে কথা বলার আগে মুদ্রাস্ফীতি কী, কেন ও কিভাবে অর্থনীতিতে প্রভাব ফেলে সে বিষয় কিছুটা আলোকপাত করা প্রয়োজন। মুদ্রাস্ফীতি হচ্ছে অর্থনীতিতে মুদ্রার পরিমাণ বেড়ে যাওয়া। অন্য দিকে মূল্যস্ফীতি হচ্ছে কোনো একটি নির্দিষ্ট সময়ের ব্যবধানে দ্রব্যের মূল্য বেড়ে যাওয়া। মুদ্রাস্ফীতি ও মূল্যস্ফীতি বাংলায় দু’টি আলাদা শব্দ হিসেবে অর্থনীতিতে ব্যবহৃত হলেও ইংরেজিতে একটি শব্দ ‘ইনফ্লেশন’ দিয়ে বোঝানো হয়। সাধারণ অর্থে মূল্যস্ফীতি বা মুদ্রাস্ফীতি বলতে একটি নিদিষ্ট সময়ে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পাওয়া ও মুদ্রা মূল্য কমে যাওয়া বোঝায়।

উদাহরণস্বরূপ বলা যায়- মুদ্রাস্ফীতি বলতে বোঝায়, আগে ৫০ টাকা দিয়ে এক কেজি চাল পাওয়া যেত; এখন মুদ্রাস্ফীতির কারণে ৫০ টাকা দিয়ে আধা কেজি চাল পাওয়া যায়। অন্য দিকে মূল্যস্ফীতি মুদ্রাস্ফীতির একটি ভাগ যা দিয়ে পণ্যের মূল্য বেড়ে যাওয়াকে বোঝায়।

যে কারণে মুদ্রাস্ফীতি বা মূল্যস্ফীতি হয় এর সহজ উদাহরণ- সাধারণত পণ্যের চাহিদা ও জোগানের ভারসাম্যের মাধ্যমে পণ্যের দাম নির্ধারিত হয়। জোগানের চেয়ে চাহিদা বেড়ে গেলে পণ্যের দাম বেড়ে যাবে; উল্টোটা হলে কমবে। অন্যদিকে, মুদ্রার মানও নির্ভর করে মুদ্রার চাহিদা ও জোগানের ভারসাম্যের ওপর। অর্থাৎ বাজারে ডলারের চাহিদার চেয়ে জোগান কমে গেলে এর দাম বেড়ে যাবে; উল্টোটা হলে কমে যাবে। তবে একই সাথে পণ্য ও মুদ্রা দু’টির চাহিদা ও জোগানের ভারসাম্যহীনতা দেখা দিলে মূল্যস্ফীতির ওপর দ্বৈত প্রভাব পড়বে। ফলে পণ্যের দাম লাফিয়ে বাড়বে; তাই হচ্ছে এখন।

মানুষের শরীরের ভেতরে যেকোনো সমস্যা দেখা দিলে তার প্রভাবে শরীর যখন গরম হয়ে যায় এর নাম জ্বর। তেমনি দেশের অর্থনীতিতে যেকোনো সমস্যা দেখা দিলে তার প্রভাব পণ্যের মূল্যের ওপর পড়ে; এর নাম মূল্যস্ফীতি। মূল্যস্ফীতিকে বলা হয় অর্থনীতির নীরব ঘাতক। অনেকেই মূল্যস্ফীতিকে বলেন এক ধরনের বাধ্যতামূলক কর। কেননা এর জন্য মানুষকে বাড়তি অর্থ ব্যয় করতে হয়। মূল্যস্ফীতির প্রভাবে ধনীদের তেমন কিছু আসে-যায় না। তবে সীমিত আয়ের মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কমে যায়। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, আগে যে পণ্য কিনতে ১০০ টাকা ব্যয় করতে হতো, মূল্যস্ফীতির হার ১০ শতাংশ হলে সেই একই পণ্য কিনতে ১১০ টাকা ব্যয় করতে হবে। কিন্তু ওই বাড়তি ১০ টাকা আয় না বাড়লে ১০ টাকার পণ্য কম কিনতে হবে। ফলে জীবন মানের ওপর চাপ পড়বে।

মূল্যস্ফীতি অর্থনীতির জন্য একটি সাধারণ ঘটনা হয়, যদি মৃদু হয়। মৃদু মূল্যস্ফীতিতে আস্তে আস্তে পণ্যের দাম বাড়ে, সাথে মানুষের আয়ও বাড়ে, ফলে মানুষ মূল্যস্ফীতির সাথে মানিয়ে নেন, উৎপাদকরা বিনিয়োগ বাড়িয়ে দেন, অর্থনীতিতে প্রবৃদ্ধি হয়, যা অর্থনীতির জন্য ভালো। কিন্তু মূল্যস্ফীতি যদি অর্থনীতির বিভিন্ন সূচকের সমস্যার কারণে হয় এবং পণ্যমূল্য লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ে তখন এর সাথে সীমিত আয়ের মানুষ তাল মেলাতে পারেন না। ফলে, মানুষের প্রকৃত আয় কমে, জীবন-মান ক্রমেই খারাপ হতে থাকে। দীর্ঘসময় এ অবস্থা চলতে থাকলে দেশের সামাজিক, রাজনৈতিক, নৈতিক অবক্ষয় হতে থাকে।

এমনই একটি অবস্থার মধ্য দিয়ে অতিবাহিত হচ্ছে বিশ্ব; বাংলাদেশও। এক দিকে দেশের অব্যবস্থা অন্য দিকে আন্তর্জাতিক দুরবস্থা, অতিমারী, যুদ্ধবিগ্রহের সামগ্রিক প্রভাব এখন বাংলাদেশের অর্থনীতিতে। প্রশ্ন হচ্ছে, এই মহাসঙ্কটে পড়ে বিশ্বে মূল্যস্ফীতি ব্যাপকভাবে বাড়ছে। এশিয়া-আফ্রিকার দেশ তো বাড়ছেই, এমনকি পশ্চিমা অনেক, যেমন- যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ ইউরোপের দেশ স্মরণকালের সর্বোচ্চ মুদ্রাস্ফীতি মোকাবেলা করছে। বাংলাদেশে মূল্যস্ফীতি সরকারি হিসাবে এখন মাত্র ০৬ দশমিক ২২ শতাংশ হারে বাড়ছে; বাস্তবে এ হার অনেক বেশি। ফলে এ পরিসংখ্যানের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। কেননা ২০০৫-০৬ সালের অর্থাৎ ১৭ বছর আগের ভিত্তি বছরে আগের ভোক্তার আচরণ ধরে ঠিক করা মূল্যস্ফীতির সাথে বাস্তবের মিল পাওয়া অস্বাভাবিক তো হবেই।

শহরের চেয়ে মূল্যস্ফীতি গ্রামে বেশি যেটা আসলে স্বাভাবিক নয়। খাদ্যবহিভর্‚ত পণ্যের চেয়ে খাদ্যপণ্যের মূল্যস্ফীতি বেশি। অর্থনীতিবিদদের মতে, বর্তমানে মূল্যস্ফীতির হার ১২ শতাংশ। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বিপজ্জনক পর্যায়ে চলে আসায় টাকার দাম কমছে। আইএমএফের সুপারিশ মোতাবেক হিসাব করলে বর্তমানে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ দাঁড়ায় ৩৫ বিলিয়ন ডলার, যদিও সাধারণ হিসাবে ৪২ বিলিয়ন ডলার। আইএমএফ হিসাব অনুযায়ী, বাংলাদেশের হাতে বর্তমানে সাড়ে তিন মাসের আমদানি ব্যয় মেটানোর মতো বৈদেশিক মুদ্রা রয়েছে। ফলে ব্যবসায়ী-ভোক্তাদের মধ্যে অস্থিরতা সৃষ্টি হচ্ছে; সব কিছুর দাম বাড়ছে। সীমিত আয়ের ক্রেতার ত্রাহি অবস্থা। এর ওপর সিন্ডিকেটের কারসাজিতে নিত্যপ্রয়োজনীয় বেশকিছু পণ্যের দাম স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেড়েছে। সয়াবিন তেল, পাম অয়েলের কথা না হয় বাদই দিলাম, ভরা মৌসুমে চালের দাম যেখানে সবসময় স্বাভাবিক নিয়মে কমে যায়; সেখানে গত ক’দিনে অনেক বেড়েছে। বাড়ছে গম-আটার দামও। এভাবে সব পণ্যের দামই বাড়ছে। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে আগামী দিনে পরিস্থিতি বেসামাল হয়ে উঠবে।

মূল্যস্ফীতির এ প্রবণতা আগামী দিনগুলোতেও অব্যাহত থাকবে বলে অর্থনীতিবিদরা আশঙ্কা করছেন। এর অনেক কারণের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো, বিশ্ববাজারে পণ্যের দাম বেড়ে যাওয়া, ফলে বেশি দামে আমদানি করতে হচ্ছে। ডলারের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়নে দাম আরো বাড়তে পারে। করোনার প্রভাব পণ্য উৎপাদন-জোগানে এখনো অব্যাহত রয়েছে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ পরিস্থিতি আরো জটিল করে তুলেছে। সাথে বাজারে একধরনের অস্থিরতা, অস্থিতিশীলতা ও অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। সামষ্টিক অর্থনীতিতে বড় ধরনের টানাপড়েন স্পষ্ট। ফলে বাস্তব মূল্যস্ফীতি এখন কাগজে মূল্যস্ফীতির চেয়ে অনেক বেশি। সারা বিশ্বের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মূল লক্ষ্য এখন মূল্যস্ফীতি কমানো। কিন্তু বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক বা অর্থমন্ত্রণালয় এ নিয়ে ভাবছে কিনা, এর কোনো লক্ষণ বাজারে নেই। সবাই যেন এখন আগামী নির্বাচন নিয়ে ব্যস্ত। ফলে সীমিত আয়ের মানুষ যে মূল্যস্ফীতির চাপে পিষ্ট হচ্ছেন, তার স্বীকৃতিটুকু দেয়ার সময়ও কারো নেই।

দেশের এমন পরিস্থিতিকে সরকারের ব্যর্থতা বলে একপক্ষ হাততালি দিচ্ছে। অন্য দিকে, কর্তাব্যক্তিরা আন্তর্জাতিক বাজার, যুদ্ধবিগ্রহ, করোনা ইত্যাদি বলে নিজেদের ব্যর্থতাও অন্য কিছুর ওপর চাপিয়ে দেয়ার চেষ্টা করছে; মাঝখানে সাধারণ ক্রেতা পিষে মরছেন। বর্তমানে দেশ ও অর্থনীতির সার্বিক পরিস্থিতি থেকে দেশকে রক্ষায় সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে হবে। মুদ্রাস্ফীতি বা মূল্যস্ফীতির অন্য একটি ধাপ হলো নিশ্চলতা-স্ফীতি। এটি স্থবিরতা এবং মুদ্রাস্ফীতি শব্দের সংমিশ্রণ। এটি একটি অর্থনৈতিক অবস্থার বর্ণনা দেয়, যা ধীর গতির বৃদ্ধি এবং উচ্চ বেকারত্ব ও ক্রমবর্ধমান মূল্যের সাথে মিশ্রণ (মূল্যস্ফীতি) দ্বারা চিহ্নিত। অর্থাৎ স্ট্যাগফ্লেশন হলো একটি অর্থনৈতিক অবস্থা যা ধীর অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, উচ্চ বেকারত্ব ও ক্রমবর্ধমান মূল্যের সমন্বয়ের কারণে ঘটে। শব্দটি ১৯৬৫ সালের প্রথম দিকে আবিভর্‚ত হয়েছিল, যখন ব্রিটিশ কনজারভেটিভ পার্টির রাজনীতিবিদ ইয়ান ম্যাক্লিওড হাউজ অব কমন্সে একটি বক্তৃতায় বলেছিলেন- ‘আমাদের এখন অর্থনীতির উভয় পর্যায়ের মধ্যেই সবচেয়ে খারাপ অবস্থা যাচ্ছে; শুধু মুদ্রাস্ফীতি বা অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির স্থবিরতা নয় বরং উভয়টিই; সাথে উচ্চ বেকারত্বও। অর্থাৎ আমাদের একধরনের স্ট্যাগফ্লেশন পরিস্থিতির ইতিহাস সত্যিই তৈরি হচ্ছে।’

ওই অবস্থায় প্রাথমিকভাবে অনেক অর্থনীতিবিদ বিশ্বাস করেছিলেন, স্থিতিশীলতা আসলে সম্ভব নয়। সর্বোপরি বেকারত্ব এবং মুদ্রাস্ফীতির হার সাধারণত বিপরীত দিকে চলে। ১৯৭০-এর দশকের ‘মহা মুদ্রাস্ফীতি’ সময়কালে শেষ পর্যন্ত প্রমাণিত হয়েছে, স্ট্যাগফ্লেশন বাস্তব এবং এটি অর্থনীতিতে বিধ্বংসী প্রভাব ফেলতে পারে। মুদ্রা ও রাজস্বনীতি এবং তেল নিষেধাজ্ঞার ফলে ১৯৭০-এর দশকে অচলাবস্থা দেখা দেয়।

সত্তর সালের পরের বিশ্ব স্ট্যাগফ্লেশন দেখেনি। তবে বর্তমানে কোভিড-১৯ প্রভাব থেকে পুনরুদ্ধারের মধ্যে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি শীতল হওয়া এবং মুদ্রাস্ফীতি উচ্চ রয়ে যাওয়ায় স্থবিরতা সম্পর্কে উদ্বেগ প্রকাশ পেয়েছে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে খাদ্য সরবরাহ কমে যাওয়া এবং তেল-গ্যাসে অবরোধ দেয়ায় এই শঙ্কা আরো তীব্র হচ্ছে। বিশেষ করে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ দীর্ঘায়িত হলে এবং পাশাপাশি চীন-তাইওয়ান যুদ্ধ বেধে গেলে ১৯৭০ সালের পর ২০২২-২৩ সালে বিশ্ব আরেকটি স্ট্যাগফ্লেশনের মুখোমুখি হতে পারে। এরই মধ্যে সেই লক্ষণ দেখা দিচ্ছে পশ্চিমা বিশ্বসহ আফ্রিকা-এশিয়া মহাদেশে; বাংলাদেশও এ আশঙ্কার বাইরে নয়।

জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অর্থনীতির এক খুব কঠিন সময়ের মধ্যে ক’দিন আগে ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাংলাদেশের জাতীয় বাজেট ঘোষিত হলো। এ বাজেট থেকে মানুষ আশা করেছিল, মুদ্রাস্ফীতি কমানোর অথবা নিয়ন্ত্রণে রাখার মতো যথেষ্ট ব্যবস্থা থাকবে। অর্থনীতিবিদরা মনে করেছিলেন, বাজেটে সব প্রকার অনুৎপাদনশীল উন্নয়ন প্রকল্প কমিয়ে, মেগা প্রকল্প বাদ দিয়ে, খাদ্য ও নগদ সহায়তায় বাড়তি বরাদ্দ থাকবে। ব্যাপক কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করা, করমুক্ত আয়সীমা বাড়িয়ে দেয়া, সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির ভাতা বাড়ানো, অর্থাৎ জনগণ যাতে টিকে থাকতে পারে এর জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ থাকবে। বিলাসপণ্য অথবা কম গুরুত্বপূর্ণ পণ্য আমদানি বন্ধ করার বিষয়ে পদক্ষেপ থাকবে। কৃষি খাতে গতিশীলতা বজায়ে রাখতে সার, কীটনাশকের ওপর ভর্তুকি, আধুনিক বীজ উৎপাদন ও ব্যবহার, অধিক জমি চাষের আওতায় আনা, প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলা ইত্যাদির মাধ্যমে উৎপাদন বাড়ানোর প্রণোদনা থাকবে। কিন্তু বাজেট বিশেষজ্ঞদের মতে, তেমন কোনো উদ্যোগ নেই অথবা থাকলেও যথেষ্ট নয়।

এ কথা সত্যি, বিশ্ব একটি অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক দুর্যোগের মুখোমুখি। এ দুর্যোগ মোকাবেলায় সমন্বিত পদক্ষেপ নিতে হবে। এক দিকে যেমন অভ্যন্তরীণ উৎপাদন বাড়াতে হবে, অন্য দিকে বাড়াতে হবে রফতানি, কমাতে হবে আমদানি, অপচয়, দুর্নীতি, টাকা পাচার ইত্যাদি। ফিরিয়ে আনতে হবে বিদেশে পাচার করা অর্থ। মজার বিষয় হলো- মুদ্রা পাচার ঠেকানো তো দূরের কথা বরং মুদ্রা পাচার আরো বেড়েছে। এরই মধ্যে গণমাধ্যমের খবর হলো, সুইস ব্যাংকের তথ্যানুযায়ী, গত অর্থবছরের বাংলাদেশীদের পাচার করা অর্থের পরিমাণ অতীতের যেকোনো বছরের চেয়ে বেশি; টাকার অঙ্কে এর পরিমাণ দুই হাজার ৯২৮ কোটি টাকা। বিদেশে শ্রমিক পাঠানোর মাধ্যমে রেমিট্যান্স আনার পরামর্শ দিতেও ভাবতে হচ্ছে। এক দিকে গরিব শ্রমিক ঘাম-রক্ত ঝরিয়ে বিদেশ থেকে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা পাঠান, অন্যদিকে লুটেরারা কোটি কোটি ডলার বৈদেশিক মুদ্রা দেশ থেকে পাচার করে।

পরিশেষে বলতে হয়, এক দিকে দেশের মুদ্রাস্ফীতি বাড়ছে, অন্য দিকে বেকারত্ব প্রকট আকার ধারণ করছে; ফলে মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কমে যাচ্ছে। যদিও দেশের অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি এখনো সচল, অর্থাৎ প্রবৃদ্ধি হচ্ছে কিন্তু মুদ্রাস্ফীতি অব্যাহতভাবে বাড়লে এবং ব্যাপক কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা না গেলে বিশ্ব অর্থনীতির আশঙ্কার সাথে বাংলাদেশকেও স্ট্যাগফ্লেশন মোকাবেলা করতে হতে পারে। সুতরাং সম্ভাব্য মহাদুর্যোগ মোকাবেলায় সর্বাত্মক প্রচেষ্টা হাতে নিতে হবে ঐক্যবদ্ধভাবে; আর তা এখনই।

ড. মো: মিজানুর রহমান, লেখক : অর্থনীতিবিদ ও গবেষক

সূত্র: নয়া দিগন্ত, ১৯ জুন ২০২২, ১৯:৪৭

DISCLAIMER : Views expressed above are the author's own. The contents provided here are only for educational assistance & information purposes only. Information is provided without warranty and is to be used at the risk of the reader. All trademarks, logos and copyright issues are property of their respective owners. The creator of this page takes no responsibility for the way you use the information provided on this site.