Spoken+Grammar Bundle

 

‘২০২২ বিশ্বকাপের আয়োজক কাতার’- এক যুগ আগে ফিফার এই ঘোষণার পরই মূলত শুরু হয়ে গিয়েছিল কাউন্টডাউন। দীর্ঘ অপেক্ষার অবসান ঘটতে যাচ্ছে এবার। আজ বিশ্বকাপ ইতিহাসে নিজেদের প্রথম ম্যাচ খেলতে নামছে কাতার। স্বাগতিকদের প্রতিপক্ষ ইকুয়েডর। আল বাইত স্টেডিয়ামে ম্যাচ গড়াবে বাংলাদেশ সময় রাত ১০টায়। বিশ্বকাপে ইকুয়েডরের সর্বোচ্চ সাফল্য ২০০৬-এ শেষ ষোলোতে খেলা। এবার কোয়ার্টার ফাইনালে যাওয়ার স্বপ্ন দেখছেন কোচ গুস্তাভো আলফারো। সংবাদমাধ্যম শিনহুয়াকে তিনি বলেন, ‘আমি দলের খেলোয়াড়দের জিজ্ঞেস করেছি তারা কী চায়। তারা কি শুধুই বিশ্বকাপে অংশ নিতে কাতারে এসেছে নাকি তারা ইকুয়েডরের ইতিহাসের সেরা বিশ্বকাপ চায়? আমি ওদের বলেছি, তারা যদি নিছক অংশগ্রহণের জন্য বিশ্বকাপে আসে, তাহলে আমি আর তোমাদের সঙ্গে নেই, চললাম।’ ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা লাভের পর ১৯৭৮ সাল থেকে প্রতিটি বিশ্বকাপ বাছাইয়েই অংশ নিয়েছে কাতার। মূল পর্বে খেলার যোগ্যতা অর্জন করতে পারেনি কখনো।

ইতালির পর মাত্র দ্বিতীয় দল কাতার, যারা তাদের প্রথম বিশ্বকাপটিই খেলছে আয়োজন হিসেবে। তাই বলে কি কাতার দুর্বল দল? মোটেও নয়। গত ১০ বছরে দারুণ উন্নতি করেছে দলটি। ২০১০ সালে ৯৯তম স্থানে থাকা কাতার এখন ৫০ নম্বরে। শুরুতে আঞ্চলিক টুর্মামেন্টগুলোকে পাখির চোখ করে কাতার। তারপর বিশ্বকাপ বাছাই পর্বেও ভালো খেলতে থাকে। ২০১৪তে গালফ কাপ এবং ওয়েস্ট এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ জেতে দলটি। সবচেয়ে বড় অর্জন ২০১৯ সালে এএফসি এশিয়ান কাপ জয়। যেখানে ফাইনালে তারা হারায় নিয়মিত বিশ্বকাপ খেলা জাপানকে। কাতার কোচ ফেলিক্স সানচেজের বিশ্বাস এবার বিশ্বকাপেও চমক দেখাবে তার শিষ্যরা। ২০১৭ থেকে কাতারের হেড কোচের দায়িত্বে আছেন এই স্প্যানিয়ার্ড। কাজ করেছেন বার্সেলোনার যুব দল নিয়েও। শিষ্যদের নিয়ে স্পেন ও অস্ট্রিয়ায় বিভিন্ন ক্যাম্প করেছেন তিনি।

 অনেকটা ২০০২-এর দক্ষিণ কোরিয়ার মতোই ছিল কাতারের কর্ম পরিকল্পনা।  সেবার সহ-আয়োজক দলটি সেমিফাইনালে খেলে তাক লাগিয়ে দেয় বিশ্বকে।  মার্কাকে দেওয়া সাক্ষাতকারে সানচেজ বলেন, ‘২০১৯ সালে কেউ ভাবেনি কাতার এশিয়ার চ্যাম্পিয়ন হবে।  আমি বিশ্বকাপ জয়ের কথা বলছি না। কিন্তু গ্রুপ পর্বের তিন প্রতিপক্ষের বিপক্ষে ভালো খেলাই আমাদের চ্যালেঞ্জ। বলা তো যায় না, ফুটবলে যেকোনো কিছুই ঘটে যেতে পারে।’ গত ২৭শে সেপ্টেম্বর ফিফা প্রীতি ম্যাচে কানাডার কাছে ২-০ গোলে হারে কাতার। এরপর ৬ ম্যাচে পাঁচটিতেই জিতেছে তারা। একটি ম্যাচে সাবেক কোপা আমেরিকাজয়ী চিলির সঙ্গে ২-২ গোলে ড্র করে কাতার। গত ৯ই নভেম্বর বিশ্বকাপের আগে শেষ প্রীতি ম্যাচে কাতার ১-০ গোলে হারায় আলবেনিয়াকে।

কাতারের সাফল্য ব্যর্থতা মূলত নির্ভর করে তিনজন খেলোয়াড়ের পারফরম্যান্সের ওপর- আকরাম আফিফ, আলময়েজ আলী ও হাসসান আল হাইদোস। মনসুর মুফতার সঙ্গে যৌথভাবে কাতারের হয়ে সর্বাধিক গোলের মালিকআলময়েজ আলী।  ২০১৬তে অভিষেকের পর ৮৫ ম্যাচেই ৪২ গোল করেছেন তিনি। অন্যদিকে, সর্বাধিক ১৬৯ ম্যাচ খেলে ৩৬ গোল করেছেন হাসসান আল হাইদোস। আল সাদে খেলা আকরাম আফিফ আরব দুনিয়ার অন্যতম সেরা লেফট উইঙ্গার। ৮৯ ম্যাচে ২৬টি গোল করেছেন ২০২১ ফিফা আরব কাপের ব্রোঞ্জবল জয়ী আফিফ। ফিফা র‌্যাঙ্কিংয়ে কাতারের চেয়ে ৬ ধাপ উপরে ইকুয়েডর। দক্ষিণ আমেরিকা অঞ্চল থেকে সরাসরি মূল পর্বে খেলার যোগ্যতা অর্জন করে তারা।  বাছাই পর্বে অযোগ্য খেলোয়াড় দলে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল তাদের বিরুদ্ধে। ফিফা কোনো প্রমাণ পায়নি। তবে  যাকে নিয়ে বির্তক সেই বায়রন ক্যাস্টিলোকে চূড়ান্ত স্কোয়াডে না রেখে নতুন প্রশ্নের জন্ম দেয় ইকুয়েডর। ২০২০ থেকে ইকুয়েডরের কোচের দায়িত্বে আছেন আর্জেন্টাইন গুস্তাভো আলফারো। চলতি বছরে সব প্রতিযোগিতায় ১০ ম্যাচ খেলে ৭টিতেই ড্র করেছে ইকুয়েডর। দুটিতে জয় আর একটিতে দেখেছে হার। সবশেষ গত ১২ই নভেম্বর প্রীতি ম্যাচে  ইরাকের সঙ্গে গোলশূন্য ড্র করে তারা। নিজেদের শেষ তিন ম্যাচে একটি গোলও করতে পারেনি ইকুয়েডর। কোচ গুস্তাভোর জন্য যা দুশ্চিন্তার কারণ।  

আরও পড়ুন

দেখে নিন বিশ্বকাপের ৩২ দলের চূড়ান্ত স্কোয়াড

আন্তর্জাতিক ফুটবলে শীর্ষ ১০ গোলদাতার তালিকা

অন্ধকার গলি পেরিয়ে বিশ্বকাপের আলোয় অ্যান্থোনি সান্তোস