Print
Hits: 11385

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার উদীয়মান অর্থনীতির দেশ থাইল্যান্ড। দেশটির জিডিপির আকার ছাড়িয়েছে ৫০০ বিলিয়ন ডলার। দ্রুত সমৃদ্ধির পথে হাঁটা থাইল্যান্ডের অর্থনীতি বড় হলেও ব্যাংকের সংখ্যা বাড়েনি। বর্তমানে দেশটিতে সরকারি খাতের ব্যাংকের সংখ্যা মাত্র ছয়। আর বেসরকারি খাতে রয়েছে ১২টি ব্যাংক। সব মিলিয়ে উদীয়মান অর্থনীতির দেশটিতে লাইসেন্সপ্রাপ্ত নিজস্ব ব্যাংকের সংখ্যা ১৮।

বিশ্ববাণিজ্যের অন্যতম কেন্দ্র এশিয়ার ধনী রাষ্ট্র সিঙ্গাপুর। কিন্তু দেশটিতে স্থানীয় ব্যাংকের সংখ্যা মাত্র পাঁচ। উদীয়মান অর্থনীতির দেশ হিসেবে বহু বছর ধরে উদাহরণ হিসেবে আসছে মালয়েশিয়ার নাম। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশটিতে স্থানীয়ভাবে গড়ে ওঠা ব্যাংকের সংখ্যা মাত্র আট।

নিজস্ব ব্যাংকের সংখ্যা কম হলেও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ তিনটির সমৃদ্ধি আটকায়নি। উল্টো দেশগুলোর শক্তিশালী অর্থনীতি প্রতিনিয়ত বিদেশী ব্যাংকগুলোকে আকর্ষণ করে চলেছে। থাইল্যান্ডে প্রতিনিয়ত ব্যাংকের শাখা খুলছে বিদেশী ব্যাংকগুলো। দেশটিতে কার্যক্রম পরিচালনা করছে ৪৫টি বিদেশী ব্যাংক। সিঙ্গাপুর বিদেশী ২২টি ব্যাংক কার্যক্রম পরিচালনা করছে। মালয়েশিয়ায় বিদেশী মোট ব্যাংকের সংখ্যা ২৬।

সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড কিংবা মালয়েশিয়ার মতো উন্নত ও উদীয়মান অর্থনীতির দেশগুলোর একেবারেই বিপরীত চিত্র দেখা যায় বাংলাদেশের ব্যাংক খাতে। একই ধরনের প্রডাক্ট ও সেবা নিয়ে সমগ্র দেশে ব্যাংকিং সেবা দেয়ার প্রতিযোগিতা করছে ৫২টি বাংলাদেশী ব্যাংক। কেবল একটি ব্যাংক ছাড়া সব ব্যাংকেরই প্রধান কার্যালয় ঢাকায়। রাজধানীতে থাকা প্রধান কার্যালয়কে কেন্দ্র করে সারা দেশে পরিচালিত হচ্ছে এসব ব্যাংকের শাখা। দেশব্যাপী ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা শাখাগুলোর মৌলিক কাজ হলো আমানত সংগ্রহ করা। আর ঢাকা ও চট্টগ্রাম শহরের কিছু শাখার প্রধান দায়িত্ব হলো বড় গ্রাহকদের ঋণ দেয়া।

তার পরও সরকারের পরামর্শে প্রতিনিয়ত নতুন ব্যাংকের অনুমোদন দিচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ব্যাংকের সংখ্যার দিক থেকে অনেক আগেই সমসাময়িক অর্থনীতির দেশগুলোকে ছাড়িয়েছে বাংলাদেশ। পরিসংখ্যান বলছে, ৩০০ থেকে ৫০০ বিলিয়ন ডলার অর্থনীতির দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশেই ব্যাংকের সংখ্যা অনেক বেশি। বেশি সংখ্যার এ ব্যাংক অর্থনীতিতে সম্পদ সৃষ্টি না করে উল্টো বোঝা বাড়াচ্ছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

বর্তমানে বাংলাদেশ ব্যাংকের তফসিলভুক্ত ব্যাংকের সংখ্যা ৬১। এর মধ্যে বিদেশী ব্যাংক নয়টি। তিনটি বিশেষায়িত ব্যাংকসহ দেশে মোট নয়টি রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ব্যাংক আছে। বাকি ৪৩টি ব্যাংক প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বেসরকারি উদ্যোগে। এছাড়া নতুন নতুন বেসরকারি ব্যাংকের অনুমোদনের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকে আবেদন জমা পড়ছে।

সাধারণত কোনো দেশ অর্থনীতিতে সমৃদ্ধ হওয়ার পাশাপাশি ব্যবসা-বাণিজ্যের সম্প্রসারণ ঘটলে সেখানে কার্যক্রম পরিচালনা করতে ছুটে যায় বিদেশী ব্যাংকগুলো। এক দশক ধরে জিডিপিতে ঈর্ষণীয় প্রবৃদ্ধি ধরে রাখলেও বাংলাদেশের ক্ষেত্রে সেটি ঘটছে না। এক দশকে বাংলাদেশে বেসরকারি খাতের ব্যাংকের সংখ্যা বেড়েছে এক ডজনেরও বেশি। কিন্তু এ সময়ে বিদেশী কোনো ব্যাংক বাংলাদেশে কার্যক্রম পরিচালনা করতে আসেনি। উল্টো কয়েকটি বিদেশী ব্যাংক নিজেদের ব্যবসায়িক কার্যক্রম গুটিয়ে নিয়েছে। সব মিলিয়ে বাংলাদেশে যে নয়টি বিদেশী ব্যাংক কার্যক্রম পরিচালনা করছে, তার অর্ধেকই অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার সংগ্রাম করছে।

যে দেশের অর্থনীতি যত বেশি সুসংহত, সে দেশে স্থানীয়ভাবে গড়ে ওঠা ব্যাংকের সংখ্যা তত কম বলে মন্তব্য করেন অর্থনীতিবিদ ড. আহসান এইচ মনসুর। ব্র্যাক ব্যাংকের চেয়ারম্যান পদে দায়িত্ব পালন করা এ অর্থনীতিবিদ বলেন, সবাইকে তুষ্ট রাখার জন্য এখানে এতগুলো ব্যাংকের লাইসেন্স দেয়া হয়েছে। ব্যাংকের সংখ্যা অনেক বেশি হওয়ায় কেউ বড় হতে পারছে না। মূলধন কাঠামো অনেক ছোট হওয়ায় ব্যাংকগুলোর বৈদেশিক বাণিজ্যের সক্ষমতাও কম।

এ অর্থনীতিবিদ বলেন, নেপাল বা ভুটানের মতো দেশের ব্যাংকের মূলধনও আমাদের ব্যাংকগুলোর চেয়ে বেশি। কানাডা-সিঙ্গাপুরের মতো দেশগুলো বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ বাণিজ্যিক কেন্দ্র। কিন্তু ওই দেশগুলোর নিজস্ব ব্যাংকের সংখ্যা হাতে গোনা। অন্যদিকে বিদেশী কোনো ব্যাংক এখন আর নতুন করে বাংলাদেশে আসছে না। উল্টো আশির দশকে বাংলাদেশে কার্যক্রম পরিচালনা করত এমন অনেক বিদেশী ব্যাংক নিজেদের গুটিয়ে নিয়ে চলে গেছে। অসুস্থ প্রতিযোগিতা বন্ধ না হলে বাংলাদেশের ব্যাংক খাত দুর্বল থেকে দুর্বলতর হবে।

অর্থনীতির আকার ৩০০ বিলিয়ন ডলারের বেশি এমন দেশগুলোর ব্যাংকের সংখ্যা পর্যালোচনা করেছে বণিক বার্তা। এজন্য জিডিপির আকারের তথ্য নেয়া হয়েছে বিশ্বব্যাংক থেকে। ব্যাংকের সংখ্যা নেয়া হয়েছে সংশ্লিষ্ট দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য থেকে।

বিশ্বব্যাংকের তথ্যানুযায়ী, ২০১৯-২০ অর্থবছর শেষে বাংলাদেশের জিডিপির আকার ৩২৩ বিলিয়ন ডলার। কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে জিডিপির ভিত্তিবছর পরিবর্তন করায় ওই অর্থবছর শেষে জিডিপির আকার ৩৭৩ বিলিয়ন ডলার দেখানো হয়েছে।

প্রায় ১৩০ কোটি মানুষের দেশ ভারতের ব্যাংকের সংখ্যাও বাংলাদেশের তুলনায় অনেক কম। দেশটিতে ১২টি সরকারি ব্যাংকের পাশাপাশি কার্যক্রম পরিচালনা করছে ২২টি বেসরকারি ব্যাংক। এ ব্যাংকগুলোই ভারতজুড়ে ব্যাংকিং সেবা দিচ্ছে। তবে ভারতে অঞ্চলভিত্তিক ৪৩টি ব্যাংকের পাশাপাশি ৪৬টি বিদেশী ব্যাংকও কার্যক্রম পরিচালনা করছে। জাতীয়ভাবে কার্যক্রম পরিচালনা করা ব্যাংকের তুলনায় ভারতে আঞ্চলিক অনেক ব্যাংকের অবস্থান শক্তিশালী।


বাংলাদেশের তুলনায় অর্ধেকেরও কম ব্যাংক রয়েছে পাকিস্তানে। জিডিপির আকারসহ অর্থনীতির অনেক সূচকে বাংলাদেশের তুলনায় পিছিয়ে পড়লেও দেশটির কিছু ব্যাংকের অবস্থান খুবই শক্তিশালী। পাকিস্তানে বর্তমানে ব্যাংকের সংখ্যা ২২। এর মধ্যে সরকারি ব্যাংক পাঁচটি। এছাড়া ১৫টি বেসরকরি ব্যাংক কার্যক্রম পরিচালনা করছে পাকিস্তানে। সাম্প্রতিক সময়ে বিপর্যয়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে শ্রীলংকার অর্থনীতি। তবে অর্থনৈতিক দৈন্যের মধ্যেও দেশটির ব্যাংক খাত সুসংহত অবস্থান ধরে রেখেছে। বর্তমানে শ্রীলংকায় সরকারি-বেসরকারি ব্যাংকের সংখ্যা মাত্র ১৩। বিপরীতে দেশটিতে ১১টি বিদেশী ব্যাংকের কার্যক্রম রয়েছে।

আফ্রিকার বৃহৎ অর্থনীতির দেশ নাইজেরিয়ার জিডিপির আকার প্রায় ৫০০ বিলিয়ন ডলার। কিন্তু দেশটিতে কার্যক্রম পরিচালনা করছে মাত্র ২২টি ব্যাংক। কয়েক বছর ধরে মার্জার-অ্যাকুইজিশনের মাধ্যমে ব্যাংকের সংখ্যা কমিয়ে এনেছে নাইজেরিয়া। এক দশক আগেও দেশটিতে ব্যাংকের সংখ্যা ছিল ৮৯।

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ ফিলিপাইনের নিজস্ব ব্যাংকের সংখ্যা ১৭। এর মধ্যে সরকারি ব্যাংক রয়েছে পাঁচটি আর বেসরকারি ব্যাংক ১২টি। তবে ফিলিপাইনে কার্যক্রম পরিচালনা করছে ২৯টি বিদেশী ব্যাংক। আফ্রিকার আরব দেশ মিসরে নিজস্ব ব্যাংক রয়েছে ৩৯টি।

বিশ্বের বৃহত্তম ব্যাংকগুলোর তালিকায় সামনের সারিতে আছে দক্ষিণ কোরিয়ার বেশ কয়েকটি ব্যাংক। এশিয়ার অন্যতম শিল্পোন্নত এ দেশের মোট ব্যাংকের সংখ্যা ১৯। এর মধ্যে পুরো কোরিয়ায় কার্যক্রম পরিচালনা করে মাত্র ছয়টি বেসরকারি ব্যাংক। সরকারি খাতের ছয়টি ব্যাংকের পাশাপাশি আঞ্চলিক ভিত্তিতে ছয়টি ব্যাংক কার্যক্রম পরিচালনা করছে দক্ষিণ কোরিয়ায়। কিন্তু বিপরীতে ৩৬টি বিদেশী ব্যাংকের শাখা ও কার্যক্রম পরিচালনা হচ্ছে দেশটিতে।

অর্থনীতির আকারের তুলনায় বাংলাদেশে ব্যাংকের সংখ্যা অনেক বেশি বলে মনে করেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, বাংলাদেশের সব ব্যাংকেরই সেবার ধরন ও ব্যবসায়িক কার্যক্রম একই ধরনের। ঢাকায় প্রধান কার্যালয় স্থাপন করে সারা দেশে শাখা দিয়ে ব্যাংকগুলো কার্যক্রম পরিচালনা করছে। ব্যালান্সশিট বড় করতে গিয়ে সবাই গুটিকয়েক বড় শিল্প গ্রুপের পেছনে ঋণ নিয়ে ছুটছে। এ কারণে ব্যাংকগুলোর অবস্থাও খারাপ হচ্ছে। ব্যাংক বেশি হলে আর্থিক অন্তর্ভুক্তি বাড়বে, এটি ভুল কথা। এজেন্ট ব্যাংকিং বা এমএফএস দিয়ে আর্থিক অন্তর্ভুক্তি বাড়ানো যাবে না। এগুলো কখনই ব্যাংকিং নয়, বরং একেকটি সেবা।

শুধু উদীয়মান অর্থনীতির দেশই নয়, বরং সমগ্র দেশে কার্যক্রম পরিচালনা করে এমন ব্যাংকের সংখ্যা বিশ্বের বৃহৎ অর্থনীতির দেশগুলোয়ও কম। পরিসংখ্যান বলছে, বিশ্বের বৃহৎ অর্থনীতির দেশ যুক্তরাষ্ট্রে ব্যাংকের সংখ্যা পাঁচ হাজারেরও বেশি। তবে সমগ্র যুক্তরাষ্ট্রে কার্যক্রম পরিচালনা করে এমন ব্যাংকের সংখ্যা কেবলই হাতে গোনা। রাজ্য, শহর ও অঞ্চলকেন্দ্রিক কার্যক্রম পরিচালনা করে বেশির ভাগ ব্যাংক। আবার সব ব্যাংকের কাজ ও ধরনও একই রকম নয়। তবে বিশ্বের যেকোনো দেশ থেকেই নির্দিষ্ট কোনো শহরে কার্যক্রম পরিচালনা করা ব্যাংকে অর্থ পাঠাতে চাইলে সেটি তত্ক্ষণাৎ পৌঁছে যায় সংশ্লিষ্ট গ্রাহকের হিসাবে।

প্রায় একই ধরনের ব্যাংকিং কাঠামো পরিচালিত হয় ইউরোপের সবচেয়ে শক্তিশালী অর্থনীতির দেশ জার্মানি ও এশিয়ার শিল্পোন্নত রাষ্ট্র জাপানে। দেশ দুটির বিভিন্ন নগর ও শহরকে কেন্দ্র করে পরিচালিত হচ্ছে ভিন্ন ভিন্ন ব্যাংক। সমগ্র দেশে কার্যক্রম পরিচালনা করে এমন ব্যাংকের সংখ্যা একেবারেই কম। দেশব্যাপী সেবা প্রদান করে এমন ব্যাংকগুলো জায়গা করে নিয়েছে বিশ্বের বৃহৎ ব্যাংকের তালিকায়। বিশ্বব্যাপী বৈদেশিক বাণিজ্যের বড় অংশের ভাগীদার হয়ে উঠছে এ বৃহৎ ব্যাংকগুলো।

বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহৎ অর্থনীতির দেশ চীনের প্রধান চারটি ব্যাংক গোটা বিশ্বের বৃহৎ ব্যাংকের তালিকার শীর্ষস্থানে রয়েছে। এর মধ্যে শুধু ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যান্ড কমার্শিয়াল ব্যাংক অব চায়নার সম্পদের পরিমাণ প্রায় সাড়ে ৪ হাজার বিলিয়ন ডলার, যেখানে পুরো বাংলাদেশের জিডিপির বর্তমান আকার মাত্র ৪১৬ বিলিয়ন ডলার। চীনের পাশাপাশি বিশ্বের সর্ববৃহৎ ব্যাংক এটি। এছাড়া চীনা কনস্ট্রাকশন ব্যাংক, এগ্রিকালচার ব্যাংক অব চায়না ও ব্যাংক অব চায়না বিশ্বের শীর্ষ অন্য তিন বৃহৎ ব্যাংক। পাশাপাশি চীনে বিভিন্ন অঞ্চল ও খাতের জন্য আলাদা আলাদা ব্যাংক রয়েছে।

বাংলাদেশে ব্যাংকের সংখ্যার চেয়েও মূলধনস্বল্পতা বেশি সমস্যা বলে মনে করেন দ্য সিটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসরুর আরেফিন। বণিক বার্তাকে তিনি বলেন, আমাদের দেশের প্রায় সব ব্যাংকেরই মূলধন কাঠামো খুবই দুর্বল। ব্যাংকের ব্যালান্সশিট বড় করতে হলে মূলধন বড় করতে হবে। কিন্তু মুনাফা করে কিংবা রাইট শেয়ার ইস্যু করে মূলধন বাড়ানোর নজির বাংলাদেশে নেই বললেই চলে। এত ছোট মূলধন কাঠামো দিয়ে দেশের কোনো ব্যাংকের পক্ষেই বড় হয়ে ওঠা সম্ভব নয়। নতুন-পুরনো সব ব্যাংক একই ধরনের ব্যবসা করছে। এ কারণে ব্যাংকের সংখ্যা বাড়লেও আর্থিক অন্তর্ভুক্তি বাড়ছে না।

এক দশক ধরে অর্থনীতিতে এক ডজনের বেশি ব্যাংক যুক্ত হলেও দেশের জিডিপির প্রবৃদ্ধির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ব্যাংক খাতের সম্পদ বড় হতে পারেনি। ২০১৬ সাল শেষে দেশের ব্যাংক অ্যাসেট টু নমিনাল জিডিপি রেশিও বা জিডিপি-ব্যাংক সম্পদের অনুপাত ছিল ৬৬ শতাংশ। পাঁচ বছর পর ২০২১ সালে এ অনুপাত না বেড়ে উল্টো ৬১ শতাংশে নেমে এসেছে। অথচ এ পাঁচ বছরে দেশের জিডিপিতে নতুন করে প্রায় ২০০ বিলিয়ন ডলার যুক্ত হয়েছে। ২০১৫-১৬ অর্থবছর শেষে বাংলাদেশের জিডিপির আকার ছিল ২৬৫ বিলিয়ন ডলার। আর ২০২০-২১ অর্থবছর শেষে জিডিপির আকার ৪১৬ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে।

জিডিপির প্রবৃদ্ধির সঙ্গে ব্যাংক খাতের সম্পদ প্রবৃদ্ধির হারে অসামঞ্জস্য রয়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। তারা বলছেন, বাংলাদেশের মতো একটি অর্থনীতির দেশে জিডিপি-ব্যাংক সম্পদের অনুপাত শতভাগের বেশি হওয়ার কথা। কারণ দেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের ৯০ শতাংশই ব্যাংকনির্ভর। শিল্প থেকে অবকাঠামো, সবকিছুই নির্মিত হচ্ছে দীর্ঘমেয়াদি ব্যাংকঋণে। এমন পরিস্থিতিতে জিডিপির অনুপাতে ব্যাংকের সম্পদ ৬০ শতাংশের ঘরে আটকে পড়ার বিষয়টি নিয়ে প্রশ্নের যথেষ্ট অবকাশ রয়েছে।

হাছান আদনান

সুত্র-বণিক বার্তা